হিন্দুধর্মের অনুসারীরা ঈশ্বরে গভীরভাবে বিশ্বাস করেন। তাঁরই নির্ধারিত নিয়ম অনুসরণ করে বিশ্বসংসার চলছে। তিনি সৃষ্টি, স্থিতি ও বিনাশের সর্বময় কর্তা। তিনি পরম দয়ালু-পরম করুণাময়। তাই তাঁকে ভক্তি করা কর্তব্য। দেব-দেবীরাও ঈশ্বরের অংশ। তাই তাঁদেরও ভক্তি করা হয়।
ঈশ্বর সর্বশক্তিমান। সকল কিছুর পরিচালক তিনি। জীবের জীবিকা অর্জনের জন্য কর্মও তিনি সৃষ্টি করেছেন। আমরা যা কিছু করি, সে সবই কর্ম। ঘর-বাড়ি তৈরি করা, ফসল উৎপাদন করা, ব্যবসা-বাণিজ্য করা, লেখাপড়া করা, পূজা-অর্চনা, ধ্যান-ধারণা সবই কর্মের মধ্যে পড়ে। প্রত্যেক কর্মেরই ফল আছে। শুভ কর্মের ফল শুভবা পুণ্য আবার অশুভ কর্মের ফল অশুভ বা পাপ। এই কর্মফল কিন্তু কর্মকর্তাকে অবশ্যই ভোগ করতে হয়। ভোগ ছাড়া কোনো কর্মফল নষ্ট হয় না। এটাই কর্মবাদ। এই কর্মফল ভোগের জন্য প্রয়োজনে পুনরায় জন্মগ্রহণ করতে হয়। একে বলা হয় জন্মান্তর। এই কর্মবাদ ও জন্মান্তরবাদ হিন্দুধর্মের দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য।
মোক্ষলাভ
হিন্দুধর্মের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মোক্ষলাভ। 'মোক্ষ' কথাটির মানে হচ্ছে চিরমুক্তি লাভ। কোথা থেকে মুক্তি? বারবার জন্ম ও মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি। জীবের আত্মা ঈশ্বর বা পরমাত্মার অংশ। চিরমুক্তি লাভ করে জীবাত্মা ঈশ্বর বা পরমাত্মার সঙ্গে মিশে যায়। তখন আর জন্মগ্রহণ করতে হয় না। একেই বলে মোক্ষ।
মোক্ষ লাভের উপায় হচ্ছে সকল কর্ম ঈশ্বরে সমর্পণ করা। অর্থাৎ সকল কাজ ঈশ্বরের কাজ মনে করে সম্পাদন করা, ভোগের আকাঙ্ক্ষা পরিত্যাগ করে ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করা এবং জীব ও জগতের জন্য কল্যাণকর কাজ করে যাওয়া।
একক কাজ: কর্মবাদ ধারণাটি কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে লেখ। |